প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আ.লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কক্সবাজারে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। বর্তমানে আরো অনেক উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলছে। সবমিলিয়ে উন্নয়নের জোয়ারে বদলে যাচ্ছে কক্সবাজার। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেতুবন্ধন তৈরি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাত ৮টার দিকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে অনুষ্ঠিত ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার, বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ উৎসবে কক্সবাজারবাসীর উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে কক্সবাজারে যেতে আমাদের ভালো লাগতো। তাই আব্বা সময় পেলে আমাদের কক্সবাজার নিয়ে যেতেন। আব্বা বেশিরভাগ জেলে থাকতেন। জেল থেকে ছাড়া পেলে আমাদের কক্সবাজারে নিয়ে গিয়ে মন ভালো রাখার চেষ্টা করতেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজার যখন বিধ্বস্ত হয়; তখন আমরা কুতুবদিয়া, বদরখালী, মহেশখালীসহ বিভিন্ন বাড়িতে গিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু, সে সময়ে খালেদা জিয়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কোন খবর নেয়নি।’
কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক এলাকা গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কক্সবাজারে এক্সক্লুসিভ পর্যটন এলাকা, খেলাধুলার জন্য স্টেডিয়াম, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেডিক্যাল কলেজ, রেল লাইন প্রকল্প থেকে শুরু করে ব্যাপক উন্নয়নের কাজ চলছে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। নির্বাচনি ইশতিহারে দেওয়া ওয়াদা আমরা রক্ষা করেছি। শতভাগ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। আজকে বাংলাদেশের মানুষ ডিজিটাল দেশের সকল সুবিধা ভোগ করছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে। তাই সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।’
এর আগে, সকাল থেকে দিনব্যাপী কক্সবাজার সমু্দ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ারে বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ স্লোগানে বাংলাদেশের উন্নয়ন উৎসব শুরু হয়। পরে রাতে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি চট্টগ্রামের ভাষায় কক্সবাজারবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘তোয়ারা লাই আঁর পেট পুরে’ (তোমাদের জন্য আমার মন জ্বলে)। এটি শুনে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন কক্সবাজারের হাজারো মানুষ।
উৎসবে বিভিন্ন স্থানীয় উন্নয়নের উপর বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুবে আলী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস।
এই আয়োজনের শুরুটা হয়েছিল সকাল ৯টায়। মূল আকর্ষণ ছিল সন্ধ্যা ৮টায়। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর আতশবাজির ঝলক, বাদ্যযন্ত্রের সুরে মাতোয়ারা হয়েছিল সমবেত জনতা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, আ.লীগের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান প্রমুখ।
পাঠকের মতামত